জ্বরের উপকার অপকার
জ্বর কি?
সাধারণভাবে বললে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রাকে জ্বর বলা হয়। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হচ্ছে ৯৮.৮৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বেশি হলেই আমরা জ্বরে আক্রান্ত হতে পারি।
তাপমাত্রা বা জ্বর মাপার পদ্ধতি :
মোটামুটি দুইভাবে আমরা আমাদের শরীরের তাপমাত্র মাপতে পারি এবং বুঝতে পারি জ্বর আছে কি নাই।
১. পারদ থার্মোমিটার দিয়ে। (বাসা বাড়িতে আমরা এখনো এভাবে জ্বর মাপি)।
২. ডিজিটাল থার্মোমিটার দিয়ে। (সর্বশেষ সঠিক পদ্ধতি)
জ্বর বা তাপমাত্রা আমরা শরীরের তিন অংশে মাপতে পারি। ১. বগলের নিচে, ২. জিহবার নিচে এবং ৩. পায়ুপথে মাপতে পারি।
সবচেয়ে সঠিক তাপমাত্রা আমরা পাই পায়ুপথে, তারপর জিহবার নিচে। তারপর বগলের নিচে। বগলের নিচে আমরা যে তাপমাত্রা পাই তা মূল তাপমাত্রার চেয়ে ১ ডিগ্রি ফারেনহাইট কম। বাসায় সবচেয়ে ঝামেলামুক্তভাবে আমরা জিহবার নিচে থার্মোমিটার রেখে জ্বর মাপতে পারি। সেক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে থার্মোমিটার অবশ্যই ১ মিনিট জিহবার নিচে রাখতে হবে।
জ্বরের উপকারী প্রভাব :
কম মাত্রার জ্বর—যাতে ১০০.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট এর কম থাকে, শরীরের জন্য উপকারী বিবেচিত হয়। কম মাত্রার জ্বরের সাথে অন্য কোনো উপসর্গ না থাকলে কোনো চিকিৎসার দরকার নাই। শরীরের তাপমাত্রা একটু বেশি থাকলে অনেক ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর তা বাঁচতে পারে না। তবে আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা—যাকে আমরা বলি ইম্যুন সিস্টেম, স্বল্পমাত্রার তাপমাত্রায় তা কার্যাকর করতে পারে।
কখন জ্বর নিয়ে গুরুত্বসহ ভাবতে হবে
এক. তাপমাত্রা ১০০.৮ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে।
দুই. জ্বরের সাথে খিচুনি হলে।
তিন. দ্রুতগতির হৃদস্পন্দন হলে।
চার. চামড়ায় লালচে দাগ দেখা দিলে।
পাঁচ. মাথা ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় তীব্র ব্যথা হলে।
এসব লক্ষণ থাকলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে জ্বরের কারণ বুঝে চিকিৎসা নেয়া উচিত।
জ্বরের ক্ষতিকর প্রভাব :
১. শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
২. শরীর শুকিয়ে যেতে পারে।
৩. চিকিৎসা না হলে এর ফলে মস্তিষ্ক ও হৃদযন্ত্রে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ফোন করুন এই নাম্বারে – 01716 606355
শিশুর নিউমোনিয়া
নিউমোনিয়া সাধারণত বাচ্চাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটা কোনও কোনও ক্ষেত্রে জীবনের জন্য ঝুকিপূর্ণও হতে পারে৷ তাই শিশুর নিউমোনিয়া হলে কখনোই তা অবহেলা করা উচিত নয়৷
শিশুর নিউমোনিয়ার লক্ষণ:
প্রথমে দেখুন শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি অর্থাত্ মিনিটে বুক কয়বার ওঠানামা করছে৷ বয়স অনুসারে এই গতি বেশি-কম হতে পারে৷ দু মাস বয়সের নিচে যাদের বয়স তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি মিনিটে ৬০ বার বা তার বেশি, দু মাস থেকে ১২ মাস পর্যন্ত শিশুদের ৫০ বার বা তার বেশি এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ৪০ বার বা তার বেশি হলে আমরা বলি শিশু দ্রুত নিঃশ্বাস নিচ্ছে৷
তারপর দেখুন বুকের নিচের অংশ শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে দেবে যাচ্ছে কিনা বা ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে কিনা৷ কাশি বা ঠান্ডার সঙ্গে যদি বুক দেবে যায় এবং শিশু দ্রুত নিঃশ্বাস নেয় তাহলে ধরে নিতে হবে শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত৷ নিউমোনিয়া হলে সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ কারণ আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর প্রথম কারণ হলো নিউমোনিয়া৷
শিশুর নিউমোনিয়া হলে করণীয়:
শিশুর নাক বন্ধ থাকলে নরম কাপড় বা কটনবাড দিয়ে নাক পরিস্কার করে দিন৷ প্রয়োজনে নরসল ড্রপ বা লবন-পানির মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন৷
শিশুর কাশি থাকলে পানি জাতীয় খাবার বেশি করে খেতে দিন৷ স্বাভাবিক খাবারও দিন৷ একেবারে খেতে না পারলে অল্প অল্প করে বারবার দিন৷ শিশু বুকের দুধ খেলে বারবার বুকের দুধ দিন৷ মায়ের খাবারের সঙ্গে শিশুর ঠান্ডা লাগা বা নিউমোনিয়ায় কোনও সম্পর্ক নেই৷ তাই মাকে সব খাবার খেতে দিন৷ এ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্ক থাকুন৷
একটা কথা অবশ্যই মনে রাখবেন অযথা শিশুর ঠান্ডা বা কাশিতে এ্যান্টিবায়োটিকের কোনও প্রয়োজন নেই৷ এ্যান্টিবায়োটিক শিশুর নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করে না, বরং শিশুর ক্ষতির কারণ হতে পারে৷ নিউমোনিয়া হলেই কেবল এ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে৷ বারবার ব্যবহারে শিশুর শরীরে এ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়৷ রাখাল বালক এবং বাঘের গল্পটি মনে করুন৷ বাঘ এসেছে, বাঘ এসেছে বলে রাখাল চিত্কার করত – সবাই লাঠিসোটা নিয়ে হাজির হলে রাখাল মজা পেত৷ অবশেষে একদিন যখন সত্যিই বাঘ এল রাখাল অনেক চিৎকার করল কিন্তু কেউ এল না৷ বাঘ রাখালকে খেয়ে ফেলল৷ শিশুর ঠান্ডা লাগলে নিউমোনিয়া হবে মনে করে বারবার এ্যান্টিবায়োটিক দিলে যখন আসলেই নিউমোনিয়া হবে তখন আর এ্যান্টিবায়োটিক কাজ করবে না৷
ফোন করুন এই নাম্বারে – 01716 606355
——————————————————————————————————————————————-
ঠান্ডা জনিত শিশুরোগ :
শীতের শুরুতে আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিশু ও নবজাতকরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়। তবে শিশুদের বেলায় ৩টি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে, যদি কোনো শিশুর সর্দি-জ্বরের সঙ্গে কাশি, বুকে ঘ্যাড় ঘ্যাড় শব্দ হয় আর যদি শিশুর শ্বাঃস নিতে কষ্ট হয় তবে অবশ্যই ওই শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কারণ ঠান্ডা জ্বরের সঙ্গে বুকে ঘ্যাড় ঘ্যাড় ও শ্বাঃস কষ্ট হওয়াটা নিউমোনিয়ার লক্ষণ। ভাইরাল ইনফেকশন ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে নিউমোনিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি। কারণ শিশুদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশে শিশুরা এখনও যেসব রোগের ঝুঁকিতে রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে নিউমোনিয়া। ঠান্ডার কারণে অ্যালার্জির প্রকোপ বাড়ে। শীতের কারণে বিভিন্ন রোগ দেখা দিতে পারে। তার মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস ও চামড়ার রোগও বেড়ে যায়। বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে ডায়রিয়া দেখা দেয়। ডায়রিয়া হয় রোটা ভাইরাসের কারণে। মায়ের দুধ শিশুর পুষ্টি বাড়ায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে সর্দি-কাশি শিশুকে সহজে আক্রান্ত করতে পারে না এবং নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা সহজ হয়। শিশু যখন মায়ের বুকের দুধ পান করে, তখন শিশুকে পানি খাওয়ানোরও প্রয়োজন নেই। কারণ মায়ের দুধে ৮৯ শতাংশ পানি থাকে। আর ১১ শতাংশ থাকে সলিড খাবার। শিশুকে সময়মতো সব টিকা দিতে হবে। টিকা দেয়া হলে শ্বাঃস তন্ত্রের রোগ থেকে শিশুকে অনেকটাই নিরাপদ রাখা সম্ভব। তাই শিশুদের ক্ষেত্রে ঠান্ডা জনিত রোগ থেকে সাবধান। ঘরে বসেই পরামর্শ অথবা চিকিৎসা নিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
ফোন করুন এই নাম্বারে – 01716 606355
—————————————————————————————————————————————————
শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য :
কোষ্ঠকাঠিন্য বা কনস্টিপেশন সম্পর্কে আমরা কমবেশি জানি। কিন্তু শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, প্রতিকারই বা কী-সে সম্পর্কে ধারণা হয়তো আমাদের অনেকেরই নেই। অনেক শিশু আছে, দু-তিন দিন পায়খানা না করেও ভালো থাকে। আবার অনেকের এক দিন পায়খানা না করার কারণেই পেট ফুলে যেতে পারে। ব্যথায় শিশুটি চিৎকারও করতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য কী —-
মলত্যাগ করতে কারও যদি অসুবিধা হয় অথবা বেশি সময় লাগে, তাকেই আমরাকোষ্ঠকাঠিন্য বলে থাকি। অনেক সময় অসুস্থতার কারণে কম খাওয়ার ও অপর্যাপ্ত পানি পান করায় কিছুদিনের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। পরে সুস্থ হলে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু সব সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে এর কারণ বের করে চিকিৎসা করাতে হবে।
কারণ :
বেশি দিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য বা ক্রনিক কনস্টিপেশনের বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন-
* খাদ্যাভ্যাসজনিত কারণঃ কম আঁশযুক্ত খাবার খেলে অনেক শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে পারে। গরুর দুধ খেলেও অনেক সময় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়।
* শারীরিক ত্রুটিঃ অ্যানোরেকটাল স্টেনোসিস বা মলদ্বার জ্নগতভাবে বন্ধ থাকলে।
* স্মায়ুতন্ত্রের ত্রুটিঃ যেমন অ্যাগ্যাং লিওনোসিস করা, স্মায়ু ও মাংসপেশির ত্রুটি থাকলে।
* মানসিক প্রতিবন্ধী হলে
* স্মায়ুর সমস্যা বা সেরেব্রাল পলসি থাকলে।
* জন্মগতভাবে পেটের সামনের মাংস না থাকলে।
* শরীরের শক্তি কমে যাওয়া বা হাইপোটনিয়া হলে।
* হাইপোথাইরয়েডিজম হলে
* বহুমূত্র রোগ হলে
* শরীরে ক্যালসিয়াম বেশি হলে
* রেনাল টিউবুলার অ্যাসিডোসিস হলে।
তিন থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে বেশি। এ ধরনের শিশুর কয়েক মাস ধরে পায়খানার সমস্যা থাকে এবং বেশ কয়েক দিন পর পর পায়খানা হয়। অনেক সময় শিশুটি হয়তো প্যান্ট নষ্ট করবে, মাঝেমধ্যেই সে স্কুলে অনুপস্থিত থাকবে।
কী হয়
* পেটে ব্যথাঃ মাঝেমধ্যে থাকবে, আবার কিছু সময় থাকবে না
* খাওয়া-দাওয়ায় অনীহা, ক্ষুধামান্দ্য ভাব দেখা দেবে
* বমি হতে পারে বা বমি ভাব থাকতে পারে
* শরীরের ওজন বাড়বে কম
* পরীক্ষা করলে দেখা যাবে পেটটা শক্ত ও ফুলে আছে। পেটের ওপর হাত দিলে শক্ত মলগুলো অনুভূত হবে। মলদ্বার আর্দ্র থাকবে এবং স্পিংটার খোলা থাকবে। এর ওপরই মলগুলো আটকে থাকে।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে শিশুদের জন্মকালীন কিছু তথ্য নিতে হবে। যেমন-জ্নের পর পায়খানা বা মলত্যাগ করতে বিলম্বিত হয়েছে কি না, ছোটবেলায় মলত্যাগের অভ্যাস কেমন ছিল, খাওয়ার অভ্যাস কেমন ছিল, মা-বাবা ও সন্তানের মলত্যাগের অভ্যাস, মলদ্বারে ফিসার আছে কি না, স্টেনোসিস বা মলদ্বার বন্ধ কি না এবং মলদ্বারে স্পিংটারের টোন বা স্মায়ুর কার্যকারিতা ঠিক আছে কি না।
যদি স্পিংটার টাইট বা শক্ত হয়, মলদ্বার মলশূন্য থাকে, পেট ফোলা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে শিশুটির হারসপ্রুং রোগ হয়েছে। যদি স্পিংটার ঢিলা থাকে, তাহলে বুঝতে হবে স্মায়ুতন্ত্রের দুর্বলতার কারণে হয়েছে।
কোমরে মেরুদণ্ডের কাছে অনাকাঙ্ক্ষিত রোম এবং খাদের মতো থাকলে তা জন্মগত ত্রুটি, যাকে বলে স্পাইনা বাইফিডা অকাল্টা।
চিকিৎসা :
শিশুকে সুস্থ ও শান্তভাবে মলত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। শিশু যেন ব্যথা না পায় এবং মা-বাবা যেন চিন্তামুক্ত থাকেন, অস্থিরতায় না ভোগেন-সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। প্রয়োজনে বাচ্চাদের সময়মতো মলত্যাগের জন্য পুরস্কৃত করে উৎসাহিত করতে হবে।
শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে এবং আঁশযুক্ত খাবার দিতে হবে। শক্ত পায়খানা নরম করার জন্য ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
যদি এসবে পায়খানা না হয়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে সিম্পল এনেমা দিতে হবে। বাসায় গ্লিসারিন সাপোজিটরি দেওয়া যেতে পারে।
মলদ্বারে ফিসার থাকলে চিকিৎসা করাতে হবে। মানসিক কোনো সমস্যা থাকলে শিশু-মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
এসব চিকিৎসায় ব্যর্থ হলে ধরে নিতে হবে শিশুর হারসপ্রুং রোগ হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে দেখা যায় মলদ্বার থেকে বায়োপসি করলে প্যারা সিম্পেথেটিক গ্যাংলিওনিক সেল নেই। এ রোগ সাধারণত জ্নের প্রথম মাসে ৮০ শতাংশ এবং প্রথম বছরে ৯৫ শতাংশ ধরা পড়ে। এ রোগে পেট ফোলা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবারে অনীহা, হলুদ বমি ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
এক্স-রে করলে পেটে গ্যাস ও মল দেখা যাবে, রেকটাল অ্যাম্পুলায় গ্যাস থাকা মানেই হারসপ্রুং রোগ। অপারেশন করে এর চিকিৎসা করাতে হবে। তাই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবহেলা না করে শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখুন।
ফোন করুন এই নাম্বারে – 01716 606355
—————————————————————————————————————————————————-
অপুষ্টিজনিতশিশুরোগ (ম্যারাসমাসওকোয়াশিয়রকর )
আমিষ ও শর্করা জাতীয় খাদ্যের অভাবে শিশুদের ম্যারাসমাস ও কোয়াশিয়রকর নামক অপুষ্টিজনিত রোগ দেখা দেয়৷ আমাদের দেশে এ রোগে শিশু মৃতু্যর হার অনেক৷ ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা এ রোগে বেশী আক্রান্ত হয়৷ সাধারণত দুইটি রোগের উপসর্গ একত্রে দেখা যায়৷
ম্যারাসমাস : শর্করা জাতীয় খাদ্যের অভাবে শিশুরা এরোগে আক্রান্ত হয়৷ ১ বছরের কম বয়সী শিশুরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়৷
কোয়াশিয়রকর : প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের অভাবে শিশুরা এরোগে আক্রান্ত হয়৷ ১ বছরের বেশি বয়সের বাচ্চারা এরোগে বেশি আক্রান্ত হয়৷
কারণ :
ম্যারাসমাস
* দ্রুত মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেওয়া৷
* ৫ মাসের পূর্বে দুধের বদলে অন্য খাবার শুরু করা৷
* অতিরিক্ত পাতলা খাবার খাওয়ানো৷
* সময় মতো খাবার না দেওয়া৷
* বারবার পেটের অসুখ হওয়া৷
* কোয়াশিয়রকর
* বুকের দুধের সাথে অন্যান্য খাবার (খিচুরী, ডিম, কলা ইত্যাদি) দেরী করে ৬ মাসের বেশি বয়সে শুরু করা৷
* শর্করা জাতীয় খাবার বেশি দেওয়া৷
* অতিরিক্ত রোগে ভুগলে৷
উপসর্গ :
ম্যারাসমাস
* অতিরিক্ত শুকিয়ে যাওয়া৷
* হাড্ডিচর্মসার চেহারা৷
* চামড়ার নিচে কোনও চর্বি থাকে না
অন্যান্য :
* মাংসপেশি শুকিয়ে যায়৷
* চুল রুক্ষ হয়ে যায়৷
* চামড়া খসখসে হয়ে যায়৷
* ঘনঘন ডায়রিয়া ও নিওমোনিয়া দেখা দেয়৷
* নোখ ভংগুর হয়ে পরে৷
* খাওয়ায় অরুচি দেখা দেয়৷
* বাচ্চা ঘ্যানঘ্যানে হয়ে পড়ে৷
* যকৃত (লিভার) বড় হয়ে যেতে পারে৷
কোয়াশিয়রকর :
* শিশু বেশি শুকায় না৷
* চেহারা ফোলাফোলা থাকে৷
* চামড়ার নিচে চর্বি বর্তমান থাকে৷
* শরীরে পানি জমে৷
অন্যান্য :
* মাংসপেশি শুকিয়ে যায়৷
* চুল রুক্ষ হয়ে যায়৷
* চামড়া খসখসে হয়ে যায়৷
* ঘনঘন ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া দেখা দেয়৷
* নোখ ভংগুর হয়ে পড়ে৷
* খাওয়ায় অরুচি দেখা দেয়৷
* বাচ্চা ঘ্যানঘ্যানে হয়ে পরে৷
* যকৃত (লিভার) বড় হয়ে যেতে পারে৷
পরীক্ষা নিরীক্ষা :
* রক্ত পরীক্ষা৷
* প্রস্রাব পরীক্ষা৷
* পায়খানা পরীক্ষা৷
করণীয় :
* বাচ্চাকে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে৷
উপদেশ :
* বাচ্চাকে ২বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানো৷
* ৬মাসের পর অন্যান্য খাবার শুরু করা৷
* বাচ্চাকে নিয়মিত টিকা দেওয়ানো৷
* বাচ্চার নিয়মিত ওজন নিতে হবে৷
* পরিবার পরিকল্পনা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে৷
ফোন করুন এই নাম্বারে – 01716 606355
———————————————————————————————————————————————–
শিশুরশ্বাসকষ্ট :
যেকোনোশিশুহঠাৎসর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টওজ্বরেআক্রান্তহতেপারে।কোনোকোনোশিশুরশ্বাসেবাঁশিরশব্দ (হুইজিং) শুনেহঠাৎঅনেকেভয়পেতেপারেন।শিশুরনিঃশ্বাসেহুইজিংমানেঅ্যাজমানয়।পাঁচবছরেরকমবয়সেরশিশুদেরশ্বাসনালীরপ্রদাহঅ্যাবংসংকোচনহয়সাধারণতভাইরাসআক্রমণে।ভাইরাসআক্রান্তশিশুদেরশ্বাসনালীরঅন্যলক্ষণসমূহযেমনকাঁশি, কফ, গলাব্যথাবারবারদেখাদেয়।বারবারশ্বাসনালীরপ্রদাহঅ্যাবংস্বাভাবিকশ্বাস-প্রশ্বাসেরবাধারঅন্যান্যকারণযেমনশ্বাসনালীতেকোনোবস্তুআটকেযাওয়া, শ্বাসনালীরস্থায়ীসংকোচন, টিউমারইত্যাদিবিষয়কেযদিরোগেরবৃত্তান্তঅ্যাবংপরীক্ষা-নিরীক্ষারমাধ্যমেবাদদেওয়াযায়তবেসেক্ষেত্রেহুইজিংকেঅ্যাজমারঅন্যতমলক্ষণহিসেবেচিহ্নিতকরাসম্ভব।দেখাযায়বয়সবৃদ্ধিরসঙ্গেসঙ্গেঅনেকেরএটাকমেআসেসেহেতুহুইজিংহলেইঅ্যাজমানিরূপণকরানিতান্তইঅবিবেচকেরপরিচয়দেওয়াহবে।এঅবিবেচনায়শিশুরভুলরোগনিরূপণ, ভুলচিকিৎসাবাঅর্যাপ্তচিকিৎসাশ্বাসনালীরঅপূরণীয়ক্ষতিরকারণহয়েদেখাদিতেপারে।
প্রতিরোধ : সাধারণতশিশুদেরশ্বাসেবাঁশিরমতোশব্দহলেশ্বাসনালীতেপ্রদাহ, শ্বাসকষ্টইত্যাদিলক্ষণদেখাযায়।শিশুদেররোগেরপরিপূর্ণবৃত্তান্তস্বাস্থ্যপরীক্ষাকরেঅ্যাজমারসঙ্গেসম্পৃক্তঅন্যান্যলক্ষণকেবাদদেওয়াযায়।দেখাযায়যদিকারণগুলোসঠিকপরীক্ষা, অ্যালার্জিটেস্টওফুসফুলেরকার্যকরীক্ষমতাপরীক্ষাকরেঅ্যালার্জিরওষুধওভ্যাকসিনপদ্ধতিব্যবহারকরাহয়তাহলেকর্টিকোস্টেরয়েডেরব্যবহারঅনেকক্ষেত্রেকমেযায়।এরফলেকর্টিকোস্টেরয়েডেরবহুলপ্রতিক্রিয়াথেকেরেহাইপাওয়াসম্ভব।আমাদেরমতোউন্নতদেশগুলোতেএধরনেরপদ্ধতিতেচিকিৎসাদেওয়াহয়েথাকে।বিশ্বস্বাস্থ্যসংস্থাওএইভ্যাকসিনপদ্ধতিঅ্যালার্জিজনিতরোগেরচিকিৎসাবলেঅভিহিতকরেছেন।এইচিকিৎসাপদ্ধতিকেঅ্যালার্জিরোগীদেরদীর্ঘমেয়াদিসুস্থথাকারচিকিৎসাপদ্ধতি।অনেকেরধারণাছিলঅ্যালার্জিজনিতরোগএকবারহলেআরসারেনা।বর্তমানেউন্নতদেশগুলোতেচিকিৎসাব্যবহারযথেষ্টউন্নতিহয়েছে।অ্যালার্জিজনিতরোগপ্রথমদিকেধরাপড়লেএকেবারেসারিয়েতোলাসম্ভব।